August 2, 2025, 5:33 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের বাকি অংশ নিতে হলে আগামী তিন মাসে সরকারকে রাজস্ব আদায় করতে হবে এক লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা। দেশের বর্তমান বাস্তবতায় বাড়তি এ অর্থ আদায় করা ‘অসম্ভব’। ফলে আইএমএফ’র অর্থ ছাড়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির শর্ত অনুযায়ী আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাড়তি ৫৭ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করতে হবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর)। গতকাল সোমবার এনবিআর চেয়ারম্যানসহ আলাদাভাবে কাস্টমস, আয়কর ও ভ্যাট অনুবিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেন সংস্থাটির সফররত প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনবিআরের সবশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে দুই লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ বাকি ৩ মাসে আদায় করতে হবে এক লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা !
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে শর্ত শিথিলের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু রাজি হননি কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে আগামী বুধবার এনবিআরের তিন অনুবিভাগের সঙ্গে সংস্থাটির কর্মকর্তারা আবারও বৈঠকে বসবেন। এ শর্তপূরণ ছাড়া সমঝোতা করা না গেলে ঋণের বাকি অর্থ ছাড়ও বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি দেখছেন একাধিক কর্মকর্তা। তাঁরা বলছেন, আইএমএফের সঙ্গে এনবিআর সমঝোতার প্রস্তাব দেওয়ায় শর্ত শিথিল হতে পারে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে আইএমএফ চলমান ঋণের শর্ত অনুযায়ী কর-জিডিপি অনুপাত ০.৯ শতাংশ পয়েন্ট বাড়াতে হবে বা বাড়তি ৫৭ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। তা কিভাবে আদায় হবে তার সুনির্দিষ্ট কৌশল জানাতে পারেনি এনবিআর।
রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে আইএমএফও কিছু প্রস্তাবনা দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—বিলাসী পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো, বিভিন্ন খাতে যেসব কর অব্যাহতি রয়েছে তা চলতি জুনের পর বাদ দেওয়া এবং সব পণ্য ও সেবায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা।
এর বাইরেও প্রশাসনিক সংস্কার, রাজস্ব নীতি ও ব্যবস্থাপনা পৃথক করা, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কৌশল প্রণয়নের অগ্রগতি, আয়কর বিভাগের ডিজিটাইজেশন প্রকল্পের খসড়া প্রণয়নের অগ্রগতি, করপোরেট কর ও রিটার্ন অনলাইনে জমার সময়সীমা নির্ধারণও উঠে এসেছে প্রস্তাবনায়।
ঋণ কর্মসূচির শর্তের আওতায় এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে তিন মাসে এক লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে এনবিআরকে। বর্তমানে দেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৭.৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এটি দশমিক ৫ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭.৯ শতাংশ করার শর্ত রয়েছে। তাতে এ অর্থবছরে এনবিআরকে আদায় করতে হবে চার লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।
এরই মধ্যে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের তিনটি কিস্তিতে প্রায় ২২১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন অন্তর্র্বতী সরকার চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একসঙ্গে জুনে ছাড় হওয়ার আশা করছে।
Leave a Reply